দিনাজপুরের পার্বতীপুর থেকে নাটোর পর্যন্ত আন্তঃসীমান্ত ডিজেল পাইপলাইন সম্প্রসারণের কাজ দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে ধীরগতিতে পড়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) ও ভারতের একটি সংবাদমাধ্যম।
২০২৩ সালের মার্চে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুড়ি থেকে পার্বতীপুরের তেলের ডিপো পর্যন্ত বিস্তৃত এই পাইপলাইন উদ্বোধন করেন। ‘ইন্দো-বাংলা ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইন’ (আইবিএফপি) নামের এই প্রকল্পটি বছরে ১০ লাখ টন হাইস্পিড ডিজেল পরিবহনে সক্ষম এবং বর্তমানে বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের সাত জেলায় ডিজেল সরবরাহ করছে।
এটি ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে প্রথম আন্তঃসীমান্ত জ্বালানি পাইপলাইন। ভারতীয় অর্থায়নে এ প্রকল্পে আনুমানিক ৩৭৭ কোটি রুপি খরচ হয়েছে, যার মধ্যে বাংলাদেশের অংশে খরচ হয়েছে ২৮৫ কোটি রুপি।
বিপিসি ও ভারতীয় সংবাদমাধ্যম মিন্ট জানিয়েছে, গত জুলাইয়ে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ পাইপলাইন সম্প্রসারণ এবং জ্বালানি রফতানির পরিমাণ বাড়ানোর আগ্রহ প্রকাশ করে।
গত সোমবার বিপিসির চেয়ারম্যান মো. আমিন উল আহসান বলেন, আন্তঃসীমান্ত পাইপলাইনটি নাটোর পর্যন্ত সম্প্রসারণের জন্য সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের প্রস্তাবে আমরা মৌখিকভাবে সম্মতি দিয়েছি। তারা এখনো সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ শুরু করতে পারেনি। তিনি আরও জানান, প্রকল্পটি নাকচ করার বা বিদ্যমান কার্যক্রম বন্ধ করার কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি, এবং আমরা এখনো কোনো আলোচনায় বিষয়টি তুলিনি।
বিপিসির তথ্য অনুযায়ী, গত মাসেও (আগস্ট) আসামের নুমালিগড় রিফাইনারি থেকে বাংলাদেশ প্রায় চার হাজার টন ডিজেল আমদানি করেছে। প্রায় সাত হাজার টন ডিজেল আমদানির জন্য চারটি আমদানি আদেশও দেয়া হয়েছে।
বিষয়টি সম্পর্কে অবগত তিনজনের বরাত দিয়ে মিন্ট’র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৩১ কিলোমিটার পাইপলাইন সম্প্রসারণের প্রস্তাবে বাংলাদেশ সরকার আপাতত ‘বিরতি’ দিয়েছে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, যেহেতু প্রকল্পটি সফলভাবে পরিচালিত হয়েছে, তাই বাংলাদেশে আরও বেশি জায়গায় এর বিস্তৃতি বিবেচনা করা হচ্ছে।
সেই তিনজনের একজন গণমাধ্যমটিকে বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি কিছুটা অস্থিতিশীল থাকায় ভারত পরিস্থিতি স্থিতিশীল হওয়ার অপেক্ষা করতে চায়। তবে নির্দিষ্ট সময়সীমা নির্ধারণ করা সম্ভব নয়। অপর একজন জানান, বাংলাদেশে ডিজেলের পাশাপাশি উচ্চ সালফার জ্বালানি তেল (এইচএসএফও) ও ফার্নেস তেল রফতানির প্রস্তাবও ভারত বিবেচনা করছে।
আমিন উল আহসান বলেন, সব ট্যাংক এখনো অটোমেশনের আওতায় না আসায় বাংলাদেশ পাইপলাইনের মাধ্যমে প্রত্যাশিত পরিমাণে ডিজেল পায়নি। তার ভাষ্য, আমাদের আরও কিছু সমস্যা আছে। তবে অন্যান্য দেশ থেকে আমদানির চেয়ে খরচ কম হওয়ায় পাইপলাইনের মাধ্যমে জ্বালানি আমদানি চালু রয়েছে। এতে অভ্যন্তরীণ পরিবহন খরচও কম হয়। সব মিলিয়ে এই পাইপলাইন সম্প্রসারণ হলে তা বাংলাদেশের জন্য সুবিধাজনক হবে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

* রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণে ধীরগতি * প্রথম আন্তঃসীমান্ত জ্বালানি সংযোগ * বছরে ১০ লাখ টন ডিজেল সরবরাহ করতে সক্ষম * পাইপলাইন সম্প্রসারণ হলে বাংলাদেশের জন্য তা হবে আরও সুবিধাজনক
আন্তঃসীমান্ত ডিজেল পাইপলাইন সম্প্রসারণে ধীরগতি
- আপলোড সময় : ০৫-০৯-২০২৪ ১১:৪৩:১৯ পূর্বাহ্ন
- আপডেট সময় : ০৫-০৯-২০২৪ ১১:৪৩:১৯ পূর্বাহ্ন


কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ